ইসলাম কম বয়সে বিবাহের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে। সাধারণ ভরণপোষণ এবং শারীরিক সক্ষমতা থাকলেই মানুষকে বিবাহ সম্পাদনের জন্য উৎসাহ দিয়েছে। যেমন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন—
يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّه لَه وِجَاءٌ
অর্থ: তোমাদের মধ্যে যার باءت (বাআত) আছে, সে যেন বিবাহ করে ফেলে। আর যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ’রোজা’ রাখে। কেননা, রোজা যৌন ক্ষমতাকে দমন করে। [সহিহ বুখারি, হাদিস নং: ৫০৬৫; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং: ১৪০০]
باءت দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, সাধারণ ভরণপোষণের ক্ষমতা এবং যৌন মিলনের সক্ষমতা।
এই হাদিসে সুস্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, বিবাহের ক্ষেত্রে যুবকদের থেকে কাম্য হলো—সাধারণ খাবারদাবার, পোশাকের ব্যবস্থাপনাসহ পরিবার পরিচালনা। এর বাইরে ইসলাম বহির্ভূত যত শর্তারোপ করা হবে, সেগুলো অনেকটা বিবাহের পথে বাঁধা সৃষ্টি বলেই বিবেচিত হবে।
ইসলাম বিবাহের জন্য আরো যে শর্তারোপ করেছে, তার মধ্যে দ্বীনদারি, চরিত্র অন্যতম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন—
إِذَا خَطَبَ إِلَيْكُمْ مَنْ تَرْضَوْنَ دِينَهُ وَخُلُقَهُ فَزَوِّجُوهُ إِلاَّ تَفْعَلُوا تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الأَرْضِ وَفَسَادٌ عَرِيضٌ
অর্থ: যখন তোমাদের কাছে এমন কেউ প্রস্তাব নিয়ে আসে, যার দ্বীনদারি চরিত্রের ব্যাপারে তোমরা সন্তুষ্ট, তবে তার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক গড়ে দাও। যদি এরূপ না কর তবে পৃথিবীতে ফিতনা ও বিরাট বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। [জামে তিরমিজি, হাদিস নং: ১০৮৪]
এই হাদিস প্রমাণ বহন করে, বিবাহের কর্ম সম্পাদনের জন্য দ্বীনদারী এবং চারিত্রিক পবিত্রতা প্রথম পর্যায়ের অন্যতম লক্ষণীয়। বাহারি উপঢৌকন, মোটা অংকের মহরসহ আরো যত বিষয় বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, এসব বিবাহের পথে বাঁধা সৃষ্টির কারণ।
হ্যাঁ, এই কথা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে, বিবাহের আকদের ক্ষেত্রে মহর একটি শর্ত। কিন্তু সমস্যা হলো, মহরের পরিমাণ নিয়ে কনেপক্ষ বর্তমানে এত মোটা অংকের মহর ধার্য করতে চায়, যা যুবকদের পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব না। অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র কোরআনের একটি সূরাকেও মহর হিসেবে গণ্য করেছেন, যখন পাত্রের কাছে মহর প্রদানের মতো কোনো অর্থ ছিল না। যা থেকে বোঝা যায়, মহরের ব্যাপারটি ইসলামে একটি প্রতীকী গুরুত্ব রাখে। মহরের উদ্দেশ্য হলো, যুবক তার নববধুকে উপহার প্রদান করা। নতুবা একজন নারীর মূল্য কখনো টাকা হতে পারে না। উপহার হলো ভালবাসার নিদর্শন। এটা গর্ব, বাড়াবাড়ি করার বিষয় নয়। আর আজ এটাই হচ্ছে। উল্লিখিত কারণসমূহের ফলেই বিবাহে বিলম্বনা এবং আইবুড়োত্বের মতো সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে। যেগুলো সমাজে নানামুখী সংকট ছড়িয়ে দিয়েছে। একমাত্র ইসলামী নির্দেশনা মেনেই এগুলো থেকে দূরে থাকা সম্ভব।